কক্সবাজারে করোনা ভাইরাসের টিকাদান আগামী রোববার থেকে শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪২ হাজার মানুষের জন্য ৮৪ হাজার টিকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কক্সবাজার জেলার করোনা ভাইরাসের টিকাদানের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল, কক্সবাজার সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৩টি টিকাদান কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। তবে প্রথম দিন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে টিকাদান কর্মীদের ভ্যাকসিন দিয়েই এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভ্যাকসিন পেতে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে আজ বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রæয়ারি) পর্যন্ত। গত ৩১ জানুয়ারী ৮৪ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন কক্সবাজারে আনা হয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মার একটি কাভার্ড ফ্রিজার ভ্যানে করে এসব ভ্যাকসিন আনার পর কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই স্টোরে নির্ধারিত তাপমাত্রায় রাখা হয়েছে। এসব করোনা ভ্যাকসিনের নিরাপত্তার জন্য সেখানে পুলিশও মোতায়েন রাখা হয়েছে। কক্সবাজারে আনা করোনার ভ্যাকসিন গুলো ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড আ্যাষ্ট্রাজেনের “কোভিড শিল্ড” টিকা বলে জানায় সূত্রটি। তবে করোনা টিকার জন্য কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত কতজন রেজিষ্ট্রেশন করেছেন তা জানা যায়নি।
সূত্রটি জানায়, ৮ হাজার ৪০০টি ভায়ালে ৮৪ হাজার ডোজ করোনা ভাইরাসের টিকা রয়েছে। প্রতিটি ভায়ালে টিকা রয়েছে ১০ ডোজ করে। প্রতিটি কার্টনে এক হাজার ২০০ ভায়াল টিকা রয়েছে। একজন নাগরিককে ২ ডোজ করে করোনা ভাইরাসের এই টিকা নিতে হয়। সে হিসাবে কক্সবাজারের ৪২ হাজার নাগরিককে করোনা ভাইরাসের এই টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। এক ডোজ টিকা দেওয়ার ৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ টিকা দিতে হবে।
সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ক্যাটাগরীর নাগরিকগণকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা ভাইরাসের এই টিকা দেওয়া হবে। তারা হলো : সকল সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, স্বাস্থ্য কর্মী, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বাস্থ্য বিভাগীয় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, মেডিকেল কলেজের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেনাবাহিনী সহ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল সদস্য, বিজিবি, পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, গণমাধ্যম কর্মী, ব্যাংক কর্মকর্তা, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়োজিত, রাষ্ট্র পরিচালনার নিমিত্তে অপরিহার্য সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেবাদানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, স্বাস্থ্য কর্মী, করোনার সম্মুখযোদ্ধা সহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত স্টাফ। মানবদেহে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রয়োগ সম্পর্কে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সহ প্রতি উপজেলা থেকে ৫ জনকে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা জেলার টেকনেশিয়ান, নার্স, উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার পরিকল্পনা ভিজিটরসহ সংশ্লি অন্যান্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের মাধ্যমে যাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তাদের শরীরে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে নানাদিক বিশ্লেষণসহ হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান সহকারী সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর।